ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে থাকা বাংলাদেশি জাহাজ ‘এমভি বাংলার সমৃদ্ধি’তে গোলার আঘাতে নিহত হওয়া বাংলাদেশি নাবিক হাদিসুর রহমান চট্টগ্রামের মেরিন একাডেমি থেকে পাস করার পরই উঠেছিলেন ওই জাহাজে। গত তিন বছর ধরে কাজ করার পর জাহাজটিতে সর্বশেষ তিনি থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
জাহাজের নাবিকেরা জানিয়েছেন, বুধবার স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা ১০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় রাত ৯টার দিকে) জাহাজটিতে গোলার আঘাত লাগে। এতে আগুন ধরে যায়। গোলার আঘাত হানার সময় হাদিসুর জাহাজের বাইরে এসে মোবাইলে কথা বলছিলেন। হঠাৎ একটি গোলা এসে পড়ে জাহাজটিতে। এতে দগ্ধ হয়ে মারা যান ৪৭ বছর বয়সী এই নাবিক।
বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের সাধারণ পণ্যবাহী জাহাজ বাংলার সমৃদ্ধি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে পৌঁছানোর পর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে সেখানে রয়েছে। জাহাজে বাংলাদেশের ২৯ জন নাবিক রয়েছেন। এদের মধ্যে দুজন নারীও রয়েছেন। ওই দিন ভোরেই রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা শুরু করার সপ্তম দিনে বাংলাদেশি জাহাজে গোলার আঘাতের ওই ঘটনা ঘটল। এই আঘাতেই মারা যান হাদিসুর রহমান।
হাদিসুর রহমানের বাড়ি বরগুনার বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ গ্রামে। সর্বশেষ তিনি বাড়িতে এসেছিলেন মাসছয়েক আগে। গত সোমবারও বাড়িতে স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেছেন। হাদিসুরের চাচা বেতাগী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাকসুদুর রহমান জানান, হাদিসুর চট্টগ্রাম মেরিন একাডেমি থেকে পাস করার পর ২০১৮ সাল থেকে ওই জাহাজে ছিল।
গত ২৬ জানুয়ারি ভারতের মুম্বাই বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করেছিল বাংলার সমৃদ্ধি। তুরস্কের একটি বন্দরে পণ্য খালাস করে এটি যায় ইউক্রেনে। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশি জাহাজ ‘এমভি বাংলার সমৃদ্ধি ইউক্রেনের অলিভিয়া বন্দরে পৌঁছায়।
তবে ওই দিনই দেশটিতে রাশিয়ার হামলা শুরু হলে বন্দরের সব কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। সেই সঙ্গে জাহাজে আটকা পড়েন ক্যাপ্টেন জি এম নুর ই আলম, চিফ ইঞ্জিনিয়ার ওমর ফারুকসহ ২৯ বাংলাদেশি নাবিক। কয়েকদিন পরেই ‘সিমেন্ট ক্লে’ নিয়ে জাহাজটির ইতালির রোভেনা বন্দরের উদ্দেশে যাত্রার কথা ছিল।
সিপি