আল্লামা শফীর কথা মানছে না ছাত্ররা, বিশেষ শুরা বৈঠকের দাবি

মাওলানা রুহী আহত, আনিসের কক্ষে ভাঙচুর

হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শফীর ছেলে আনাস মাদানীকে চট্টগ্রামের হাটহাজারী দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদ্রাসার শিক্ষক পদ থেকে বহিষ্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আনাস মাদানীর কক্ষে হামলা চালিয়েছে। সন্ধ্যার এই ঘটনায় হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা রুহী আহত হয়েছেন বলে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এছাড়া এ সময় আনাস মাদানীর কক্ষে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

এদিকে হাটহাজারী দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদ্রাসার বর্তমান মুহতামিম আল্লামা আহমদ শফীর পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন বন্ধ করার অনুরোধ করা হলেও সেটি প্রত্যাখান করে বিশেষ শুরা বৈঠকের দাবি জানিয়েছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে মাদ্রাসার আশপাশের এলাকা থেকে মজলিসে শুরার অনেক সদস্য মাদ্রাসায় এসে পৌঁছেছেন বলেও খবর পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে জানতে হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ আলমের মোবাইলে যোগাযোগ করা হলেও সংযোগ স্থাপন সম্ভব হয়নি।

আল্লামা শফীর কথা মানছে না ছাত্ররা, বিশেষ শুরা বৈঠকের দাবি 1

হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শফীর ছেলে আনাস মাদানীকে চট্টগ্রামের হাটহাজারী দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদরাসার শিক্ষক পদ থেকে বহিষ্কারের দাবিতে বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২ টা থেকে হাজার হাজার শিক্ষার্থী এ আন্দোলন শুরু করে। মাদ্রাসার প্রধান ফটক বন্ধ করে দিয়ে মাদ্রাসার ভেতরে অবস্থান নিয়েছে বিক্ষোভকারী ছাত্ররা।

তারা মাদরাসার মুহতামিমের পদ থেকে আল্লামা শফীকে অব্যাহতি দিয়ে নতুন মুহতামিম নিয়োগসহ ছয় দফা দাবি জানিয়েছে। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, আহমদ শফী বর্তমানে বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে ভুগছেন। তিনি শারীরিকভাবে সম্পূর্ণ অক্ষম (তাদের ভাষায় মা’জুর)। এ অবস্থায় আনাস মাদানী নিজের ইচ্ছেমত কোনো নিয়ম না মেনে মাদ্রাসা থেকে শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরিচ্যূত করছেন।

এর আগে হাটহাজারী মাদ্রাসা, হেফাজতে ইসলাম ও কওমি মাদ্রাসা বোর্ডের (বেফাক) ওপর প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ উঠেছে হেফাজত আমির আহমদ শফীর ছেলে আনাস মাদানীর বিরুদ্ধে।

আনাসের বাবা আহমদ শফী দেশের প্রবীণ কওমি আলেম। একইসঙ্গে তিনি চট্টগ্রামের হাটহাজারী দারুল উলুম মুঈনুল ইসলামের (হাটহাজারী মাদ্রাসা) মহাপরিচালকও। এছাড়া তিনি হেফাজতের আমির ও বেফাকের চেয়ারম্যানের দায়িত্বেও রয়েছেন।

হাটহাজারী মাদ্রাসার কয়েকজন শিক্ষক ও ছাত্রের অভিযোগ, আহমদ শফী দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত কারণে মাদ্রাসার প্রশাসনিক তদারকিতে অক্ষম হয়ে পড়ছেন। একাধিকবার তাকে দেশে বিদেশে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। নিজের বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় আহমদ শফী দাপ্তরিক কাজে ছোট ছেলে মাওলানা আনাস মাদানীর ওপর নির্ভর হয়ে পড়েন। এই সুযোগে মাওলানা আনাস মাদানী হাটহাজারী মাদ্রাসা, হেফাজতে ইসলাম ও বেফাকে নিজের বলয় বাড়াতে তৎপরতা চালাচ্ছেন।

শাহ আহমদ শফী নিজের একক সিদ্ধান্তে ছেলে মাওলানা আনাস মাদানীকে হাটহাজারী মাদ্রাসার শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন। মাদ্রাসার মহাপরিচালকের ছেলে হিসেবে তিনি প্রভাব বিস্তার শুরু করেন। তার সুপারিশের ভিত্তিতে মাদ্রাসায় শিক্ষক নিয়োগ, বরখাস্ত করা হয় প্রতিষ্ঠানের গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে।

এআরটি/সিএম/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!