আমদানির দুশ্চিন্তা এখন পেঁয়াজের ঝাঁঝ

মিশর-তুরস্কে ঝাঁঝ নেই, তাই চাহিদা কম—বলছেন ব্যবসায়ীরা

আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে মিশর ও তুরস্ক থেকে সীমিত পরিমাণে আরও পেঁয়াজ আসছে বাংলাদেশে। পেঁয়াজের আকস্মিক সংকট কাটাতে সরকার দ্রুত আমদানির এই উদ্যোগ নিয়েছে। আলাদা আলাদা কয়েকটি এলসির (ঋণপত্র) মাধ্যমে মিশর ও তুরস্ক থেকে পেঁয়াজ আমদানি করা হচ্ছে। তবে শুরুতে দেড় থেকে দুই লাখ টন পেঁয়াজ আসবে মিশর ও তুরস্ক থেকে। বাজারের চাহিদা দেখে পরে আরও পেঁয়াজ আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানা গেছে। এদিকে আমদানিকারকদের সুবিধার্থে বুধবার (২ অক্টোবর) পেঁয়াজ আমদানির ঋণপত্রে সর্বোচ্চ সুদের হার ৯ শতাংশ নির্ধারণ করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ার পর সরকার মিয়ানমারের পাশাপাশি মিশর ও তুরস্ক থেকে পেঁয়াজ আমদানির উদ্যোগ নেয়। ২৯ সেপ্টেম্বরের পর থেকে এখন প্রায় প্রতিদিনই মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আসছে। বুধবারও (২ অক্টোবর) মিয়ানমার থেকে প্রায় এক হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ এসেছে। অন্যদিকে মিশর ও তুরস্ক থেকে পেঁয়াজবাহী জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে এসে নোঙর করেছে। ওই পেঁয়াজ জরুরিভিত্তিতে খালাসের ব্যবস্থা নিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

দেশে বছরে মোট পেঁয়াজের চাহিদা প্রায় ২৪ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে গত ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে দেশে পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়েছে ২৩ দশমিক ৩০ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ পেঁয়াজ স্বাভাবিকভাবেই নষ্ট হয়। যার পরিমাণ সাড়ে সাত লাখ টন। অন্যদিকে বছরে পেঁয়াজ আমদানি করা হয়ে থাকে ৮ থেকে ১০ লাখ মেট্রিক টন।

জানা গেছে, মিশর ও তুরস্ককে এখন পর্যন্ত পেঁয়াজ আমদানির প্রধান উৎস হিসেবে ধরা হলেও বাজারচাহিদার হিসাব মাথায় রেখে আপাতত তুলনামূলক স্বল্প পরিমাণে আমদানি করা হবে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, মিশর ও তুরস্কের পেঁয়াজ নিয়ে ক্রেতাদের আগ্রহ কিছুটা কম। কারণ আকারে বড় হলেও ওই দুই দেশের পেঁয়াজের ঝাঁঝ কম।

অন্যদিকে মিশরের পেঁয়াজে কীটনাশকের পরিমাণের মাত্রা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। এ কারণে গত ১৭ জানুয়ারি সৌদি আরব মিশর থেকে পেঁয়াজ আমদানি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। মিশরে উৎপাদিত পেঁয়াজের নমুনা পরীক্ষা করে দেখা গেছে, তাতে যে হারে কীটনাশকের অবশিষ্টাংশ রয়েছে, তা আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের চেয়ে বেশি। তবে বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, বাংলাদেশে আমদানি করা পেঁয়াজে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক যে নেই—সে ব্যাপারে নিশ্চিত করেছে মিশরের কৃষি মন্ত্রণালয়।

বাংলাদেশের পেঁয়াজ আমদানির সবচেয়ে বড়ো উৎস ভারত গত ২৯ সেপ্টেম্বর পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দিলে বাজারে বড়ো ধরনের সংকটের পাশাপাশি পেঁয়াজের দাম পারদের মতো উঠতে শুরু করে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!