ক্ষমতা/ আবাসিক এলাকায় অনুমোদন ছাড়াই সাবেক মন্ত্রীপুত্রের বাণিজ্যিক ক্লাব

0

চট্টগ্রামের কাতালগঞ্জ আবাসিক এলাকায় ‘ফিফথ এভিনিউ’ নামে একটি অবৈধ কমিউনিটি সেন্টার স্থাপন করে ব্যবসা করছেন সাইফুল ইসলাম। তিনি সাবেক প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী এবং নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নুরুল ইসলাম বিএসসির ছেলে। পিতার এই পরিচয় ব্যবহার করে তিনি চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলিই দেখাচ্ছেন না শুধু, গা করছেন না ব্যবসা বন্ধের নোটিশেও—এমনই অভিযোগ স্থানীয় এলাকাবাসী এবং খোদ সিডিএ কর্মকর্তাদের। সাইফুল ইসলামও অবশ্য আবাসিক এলাকায় অনুুমোদন ছাড়া ব্যবসা করছেন—এ কথা স্বীকার করে বলেন, ‘সময়ের প্রয়োজনেই আবাসিক এলাকায় বাণিজ্যিক ভবন।’

অনুমোদন ছাড়াই কাতালগঞ্জ আবাসিক এলাকার চার নম্বর সড়কের ২৭ নম্বর প্লটে ১১ হাজার বর্গফুট আয়তনের কমিউনিটি সেন্টার ‘ফিফথ এভিনিউ’ চালু হয় ২০১৭ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কাতালগঞ্জ আবাসিক এলাকার এক ভবন মালিক চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘ফিফথ এভিনিউ’ চালু হওয়ার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এলাকায় গাড়ির জ্যাম লেগে থাকে। এতে আমাদের নিজস্ব গাড়ি এলাকায় চলাচলে কষ্ট হয়ে যায়। রাতের বেলায় আতশবাজির শব্দে বৃদ্ধ ও শিশুদের সমস্যা হয়। গায়ে হলুদ ও অন্যান্য অনুষ্ঠানের উচ্চ শব্দে এলাকায় শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় মনোনিবেশে সমস্যা হয়।’ তিনি কমিউনিটি সেন্টার পরিচালনায় কাতালগঞ্জ আবাসিক এলাকার কল্যাণ সমিতির নীরবতায় প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘সমিতি কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ।’

s alam president – mobile

এব্যাপারে কাতালগঞ্জ আবাসিক এলাকা কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আবাসিক এলাকায় বাণিজ্যিক ভবন তো এলাকায় নেতিবাচক প্রভাব অবশ্যই ফেলছে। এলাকাবাসীর পক্ষে সমিতি থেকে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে অভিযোগ জানিয়েছি। সেটা দেখার দায়িত্ব সিডিএর।’

সিডিএর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও অথরাইজড অফিসার মঞ্জুর হোসেন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘ফিফথ এভিনিউ’র প্লটটি আবাসিক ভবনের জন্য অনুমোদিত। বাণিজ্যিক ব্যবহারের কোনো সুযোগ নেই। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এটি বন্ধের নোটিশ দিয়েছে। বন্ধ না হলে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিডিএ’র আরেক প্রকৌশলী জানান, ‘সকল আবাসিক এলাকা থেকে বাণিজ্যিক ভবন উচ্ছেদে শিগগিরই মাঠে নামবে সিডিএ। আমাদের ম্যাজিস্ট্র্রেট সংকট ছিল, এখন তা কেটে গেছে। একে একে সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ হবে, সাথে ‘ফিফথ এভিনিউ’ও।’

Yakub Group

‘ফিফথ এভিনিউ’র মালিক সাইফুল ইসলাম চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, আবাসিক এলাকার পরিকল্পনায় কমিউনিটি সেন্টার নেই—এটা সত্য। তবে সময়ের ব্যবধানে অনেক কিছুই পরিবর্তন হয়। মানুষের প্রয়োজনেই এই কমিউনিটি সেন্টার।’

শব্দ দূষণ ও পরিবেশ বিপর্যয়ের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘আমরা ভাড়া দেওয়ার সময় গ্রাহককে বলে দিই সাউন্ড পলিউশন (শব্দ দূষণ) করা যাবে না। রাত ১২টার মধ্যে অনুষ্ঠান শেষ করতে হবে। কেউ যদি শর্ত না মানে আমরা নিজেরাই পুলিশের সহায়তা নিয়ে তা বন্ধ করে দিই।’

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!