আবার অস্থির পেঁয়াজের বাজার, এবার ভারত সীমান্তের ‘অজুহাত’

দীর্ঘ সময় স্থিতিশীল থাকার পর আবারও বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারি ও খুচরা বাজারে দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভারতীয় পেঁয়াজের দাম সীমান্তে বৃদ্ধির কারণের চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জেও দাম বেড়েছে।

এদিকে পেঁয়াজের সরবরাহ না বাড়ালে সামনে দাম আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলেছেন, দেশি পেঁয়াজের মৌসুম প্রায় শেষের দিকে, ফলে দেশি পেঁয়াজের মজুদ কমে যাচ্ছে। খাতুনগঞ্জে দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ নেই।

একইসঙ্গে ভারতের নাসিক রাজ্যে বন্যায় পেঁয়াজ উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অভ্যন্তরীণ বাজারে দাম বৃদ্ধি ও রপ্তানিমূল্য বৃদ্ধির কারণে আমদানি খরচ বেশি পড়ছে ফলে পেঁয়াজের দাম বাড়ছে। বর্তমানে বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ কম থাকায় ঘাটতি রয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

দাম বৃদ্ধির বিষয়ে খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ বাজারে পেঁয়াজের পাইকারি ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ইদ্রিস বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা মূলত আমদানিকারকদের কাছ থেকে পেঁয়াজ কিনে থাকেন। গত সপ্তাহে যে পেঁয়াজ ৪৫ টাকায় পাইকারি ব্যবসায়ীরা কিনেছেন। এখন সেই একই পেঁয়াজ কিনতে হয়েছে মানভেদে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়। বর্তমানে খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজের চাহিদাও তেমন নেই। তবুও সপ্তাহের ব্যবধানে বৃদ্ধি পাচ্ছে পেঁয়াজের দাম।’

দেশে ভোগ্যপণ্যের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে রোববার (১৩ আগস্ট) পাইকারি পর্যায়ে প্রতিকেজি ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৫১ থেকে ৫৬ টাকায়। মাত্র দুদিন আগে অর্থাৎ গত সপ্তাহের বুধবার ও বৃহস্পতিবার বাজারে একই মানের পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ টাকায় ৪৫ টাকায়। এর আগের সপ্তাহে পাইকারিতে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ৪০ টাকায়। সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়েছে মানভেদে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত।

আবার এই পেঁয়াজ খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকায়। অথচ খুচরা ক্রেতারা গত দু’সপ্তাহ আগেও পেঁয়াজ ক্রয় করেছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায়। সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারিতে ১০ টাকা বাড়লেও খুচরায় বেড়েছে ২০ টাকা পর্যন্ত।

খাতুনগঞ্জের কাঁচাপণ্য ব্যবসায়ী ও মেসার্স আলী ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী জসিম উদ্দিন বলেন, ‘ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বন্যা ও রপ্তানিমূল্য বাড়িয়ে দেওয়ার অজুহাতে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। ভারতের বিকল্প হিসেবে বিভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করতে হবে। এভাবে বাজার স্থিতিশীল রাখতে হবে। খাতুনগঞ্জে দেশি পেঁয়াজের মজুদ নেই। যা আছে সবই ভারতীয় পেঁয়াজ। যা মানভেদে বিভিন্ন মূল্যে বিক্রি হচ্ছে।’

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রামের সভাপতি নাজের হোসেন বলেন, ‘ভোগ্যপণ্যের বাজার ব্যবসায়ীদের মর্জির ওপর নির্ভর করে। তারা এক সময় একেক অজুহাতে দাম বৃদ্ধি করে থাকেন। এখন ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভারতে বন্যা হয়েছে তাই পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। এখন আমাদের কথা হচ্ছে, বাজারে বর্তমানে যেসব পেঁয়াজ আছে, সেগুলো তো দুই সপ্তাহ আগে আমদানি করা।’

তিনি বলেন, ‘এখন ভারতের বন্যার অজুহাত দেখিয়ে আবারো ব্যবসায়ীরা ক্রেতাদের পকেট কাটছে। প্রশাসনের উচিত পেঁয়াজের ক্রয় মূল্য ও বিক্রয় মূল্য যাচাই করে অভিযান পরিচালনা করা। না হলে ব্যবসায়ীরা আবারও পেঁয়াজের বাজার অস্থির করে তুলবে।’

এএস/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm