আফগানিস্তানের কাছে ফুটবলেও হারলো বাংলাদেশ
একদিন আগেই আফগানিস্তান ক্রিকেট দলের কাছে হেরেছে বাংলাদেশ। চট্টগ্রাম টেস্টে সাকিব আল হাসানদের হারিয়ে দল পেয়েছে ঐতিহাসিক এক জয়। সেই সাফল্যের রেশ থাকতেই আফগান ফুটবল দলের বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। স্থান, কাল, পাত্র- সবই আলাদা। শুধু প্রতিপক্ষ দেশ সেই আফগানিস্তান। চট্টগ্রাম থেকে প্রায় ৩ হাজার কিলোমিটার দুরের শহর তাজিকিস্তানের দুশানবেতে থেকেও এলো হারের খবর। চট্টগ্রামে ছিল ক্রিকেটে, দুশানবেতে ফুটবলে। ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে ক্রিকেটের পর ফুটবলেও কাবলিওয়ালাদের কাছে পরাজয় ঘটলো বাংলাদেশের। আফগানিস্তান ১-০ ব্যবধানে হারিয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল দলকে। বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের প্রথম ম্যাচেই হার দেখল জেমি ডে’র শিষ্যরা।
মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) তাজিকিস্তানের রাজধানী দুশানবের সেন্ট্রাল রিপাবলিকান স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে দুর্দান্ত খেলেই জয় তুলে নেয় আফগানরা। যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানে আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজন সম্ভব নয়, বলেই খেলাটি হয়েছে তাজিকিস্তানে। আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচ দিয়ে কাতার-২০২২ বিশ্বকাপ বাছাইয়ের দ্বিতীয় পর্বের মিশন শুরু করেছে বাংলাদেশ। দেশের কোটি কোটি চোখের নজর ছিল মধ্য এশিয়ার দেশটির রাজধানীতে- কি করেন জামাল ভূঁইয়ারা?
আফানিস্তানের ক্রিকেটাররা সব অংক ভুল প্রমাণ করে বাংলাদেশকে হারাতে পারলেও, একই কাজ করতে পারলেন না বাংলাদেশের ফুটবলাররা। মাঠে মিলে গেলো সহজ সমীকরণ- ফেবারিট দলটিই ঘরে ফিরেছে জয় নিয়ে। যেখানে চট্টগ্রামে জিতেছে আন্ডারডগ আফগান ক্রিকেটাররা, সেখানে দুশানবেতে আন্ডারডগ বাংলাদেশ জিততে পারলো না।
দুশানবের রিপাবলিকান সেন্ট্রাল স্টেডিয়ামে ম্যাচের ফল আফগানিস্তান ১: বাংলাদেশ : ০। তবে স্কোর এর চেয়ে তিন-চারগুন হলেও অবাক হওয়ার ছিল না। শারীরিক শক্তি আর গতিতে এগিয়ে থাকা আফগান ফুটবলাররা শুরু থেকেই চড়াও হয়ে খেলতে থাকেন। গোল পেতে ২৭ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে, এই যা!
এ সময় ডান দিক থেকে আসা বলে ফরশাদ নুরের জোরালো হেড। বাংলাদেশের গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানা হাতে লাগিয়েও বাইরে পাঠাতে পারেননি। ক্রসবারের নিচের দিকে লেগে জড়িয়ে গেলো জালে। প্রথমার্ধে বল পজেশনে আফগানিস্তানের ছিল ৬০ ভাগ, বাংলাদেশের ৪০।
দ্বিতীয়ার্ধে ব্যবধানটা আরো বাড়িয়ে ৬৮ : ৩২ করে ফেলে রশিদ খানের ভাই-ব্রাদাররা। তবে গোল ব্যবধান বাড়াতে পারেনি সেটাই সান্তনা জামাল ভূঁইয়াদের। না হলে চট্টগ্রাম টেস্টের মতো দুশানবের বিশ্বকাপ ফুটবল বাছাইয়ের ম্যাচটিতেও বড় পরাজয় বরণ করতে হতো বাংলাদেশকে।
বাংলাদেশ ম্যাচে ফেরার মতো পরিস্থিতি একবারও তৈরি করতে পারেনি। ৫৫ মিনিটে বিপলুর পরিবর্তে এ সময়ের আলোচিত ফুটবলার রবিউল হাসানকে মাঠে নামান কোচ জেমি ডে; কিন্তু রবিউলের তো আর প্রতিদিন বৃহস্পতি আসবে না। বাংলাদেশকে সর্বশেষ দুই জয় এনে দেয়া রবিউল কি-ই বা করতে পারবেন?
আফগানিস্তান তাদের প্রথম ম্যাচে ৬-০ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছে কাতারের কাছে। সেই ফল দেখে বাংলাদেশ কোচ বলেছিলেন, আফগানরা এশিয়ার সেরা দলটির কাছে ৬ গোল খেয়েছে। তাতে আমাদের খুশি হওয়ার কারণ নেই। আফগানিস্তানকে হারাতে হলে আমাদের দুর্দান্ত ফুটবল খেলতে হবে। সেটা পারেনি তার শিষ্যরা।
দৈহিক গঠন, শক্তি, গতি, টেকনিক- সব দিকেই বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে ছিল আফগান ফুটবলাররা। ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশের ঘরোয়া ফুটবল খেলা আফগানরা মাঠে প্রমাণ করেছেন কেন তারা বাংলাদেশের চেয়ে র্যাংকিংয়ে ৩৩ ধাপ ওপরে।
বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে এশিয়া অঞ্চলে গ্রুপ ‘ই’তে আছে বাংলাদেশ। যেখানে আফগানরা ছাড়াও আছে ভারত, ওমান ও এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন কাতার। ১০ অক্টোবর বিশ্বকাপের স্বাগতিক দেশ কাতারের সঙ্গে লড়বে বাংলাদেশ। ম্যাচটি হবে ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে।