আড়াই ঘন্টার ‘জিম্মি’ নাটক চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে, মেয়রের চেষ্টায় মুক্ত প্রধান নির্বাহী

প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার শেষ দিনে অস্থায়ী কর্মচারীদের হঠাৎ আন্দোলন

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন থেকে বদলি হয়ে অন্য কর্মস্থলে যাওয়ার শেষ দিনে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলমকে আড়াই ঘন্টা অবরুদ্ধ রাখে কর্মচারীরা। পরে মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর সহযোগিতায় মুক্ত হন তিনি।

বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) বিকেল চারটা থেকে প্রায় আড়াই ঘন্টা চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) ৭০/৮০ জন অস্থায়ী কর্মচারী এ ঘটনা ঘটান। তাদের অভিযোগ, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অস্থায়ী কর্মচারীদের স্থায়ীকরণের সমস্যার সুরাহা না করেননি। এছাড়া তিনি বদলির আদেশও ‘অমান্য’ করেছেন।

সূত্রে জানা গেছে, অস্থায়ী কর্মচারীরা তাদের চাকরি স্থায়ীকরণের বিভিন্ন সময় ভবন ঘেরাও, বিক্ষোভ, আন্দোলন, এমনকি সেবা কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েও চাকরি স্থায়ী করণ করতে পারেনি। এর মধ্যে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বদলির আদেশ চলে আসে। তিনি বদলির আদেশ পরিবর্তন করার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ তুলে ওই কর্মচারীরা তাকে আড়াই ঘন্টা আটকে রাখে রুমের ভেতর।

এ বিষয়ে আন্দোলনকারী অস্থায়ী কর্মচারী সাজু মহাজন বলেন, অস্থায়ীদের স্থায়ী করা নিয়ে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বারবারই বাধা দিয়ে আসছিলেন। মেয়র মহোদয় আমাদের স্থায়ী করার কথা বললেও প্রধান নির্বাহী তাতে রাজি ছিলেন না। ওনার বানানো কমিটি স্থায়ীকরণের পক্ষে রায় দিলেও তিনি তাতে খুশি নন।

অস্থায়ী ওই কর্মচারী আরও বলেন, ‘প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলমের আজকে শেষ কর্মদিবস ছিল। কিন্তু আমরা শুনতে পাই তিনি না যাওয়ার জন্য মেয়র মহোদয়কে অনুরোধ করছেন। তাই অস্থায়ীরা কর্মচারীরা ক্ষোভে ফেটে পড়ে। ওনাকে বিকেল ৪ থেকে সাড়ে ৬টা পর্যন্ত মোট আড়াই ঘন্টা আবদ্ধ রাখে কর্মচারীরা। মেয়র মহোদয় এসে আমাদের আশ্বাস দেন উনি চলে যাবে এবং আমাদের স্থায়ীকরণের বিষয়টি উনি দেখবেন। তারপর নির্বাহী কর্মকর্তাকে রুম থেকে বের হতে দেওয়া হয়।’

এ বিষয়ে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলম বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে চাকরি স্থায়ী করার জন্য আন্দোলন করেছিল অস্থায়ী কর্মচারীরা। সিটি করপোরেশন এমন কোন নিয়ম ছিলো না অস্থায়ীদের স্থায়ী করার। তারপরও মানবিক বিষয় বিবেচনা করে একটা কমিটি করা হয়, যাতে তাদের কিভাবে স্থায়ীকরণ করা যায় সব দিক বিবেচনা করার জন্য।’

প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, ‘এর মধ্যে আমার বদলির আদেশ চলে আসে। আজকে আমার শেষ কর্মদিবস ছিল। এটা শুনে অস্থায়ী কর্মচারীরা আমাকে আবদ্ধ করে রাখে। এ সময় আমার পরিবার ও আমাকে নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে তারা। তাদের ধারণা আমি চলে গেলে তাদের চাকরি স্থায়ীকরণ হবে না। অবশেষে মেয়র মহোদয়ের সহোযোগিতায় আমি বের হতে পেরেছি।’

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে চসিকে ৯ হাজারের বেশি জনবল কর্মরত। সংস্থাটি বর্তমানে ১৯৮৮ সালের জনবল কাঠামো ধারায় পরিচালিত হয়। এতে সৃজিত পদের সংখ্যা ৩ হাজার ১৮০ জন। এর বিপরীতে প্রায় ৯০০ পদ খালি আছে। এছাড়া ২০১৬ সালের এপ্রিল মাসে এক হাজার ৪৬ নতুন পদ সৃষ্টির অনুমোদন দিয়েছিল মন্ত্রণালয়। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে বিভিন্ন ক্যাটাগরির এক হাজার ১৪৮টি পদে নিয়োগের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব করে চসিক। পরে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে ৬১২ পদের বিপরীতে সরাসরি ও ৫৩৬ পদে আউটসোর্সিং নীতিমালায় ছাড় দেয় মন্ত্রণালয়।

আরএ/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm