আগের ভাড়ায় ফিরলেও গণপরিবহন যাত্রীতে ঠাসা, উপেক্ষিত স্বাস্থ্যবিধি

করোনার সময় অতিরিক্ত ভাড়ায় কম যাত্রী নিয়ে গণপরিবহন চলাচল করলেও স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো বালাই ছিল না। যাত্রী ও বিভিন্ন সংগঠনের দাবির প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্যবিধি মানার শর্তে বর্তমানে আগের ভাড়ায় যাত্রী পরিবহন শুরু হলেও স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কাই করছে না কেউ। ১ সেপ্টেম্বর থেকে আগের ভাড়ায় যাত্রী পরিবহন চালু হয়। বিপরীতে বাদুড়ঝোলা হয়েই যাত্রী উঠছে গণপরিবহনে। চালক-হেলপারদের কারো মুখে নেই মাস্ক। অভিযোগ আসছে বেশী ভাড়া আদায়েরও।

জানা গেছে, পরিবহন চালক-মালিক দাবির প্রেক্ষিতে ১ জুন থেকে ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়িয়েও স্বাস্থ্যবিধি মানেনি অধিকাংশ গণপরিবহন। ফলে বিভিন্ন সংগঠন ও সাধারণ যাত্রীদের পক্ষ থেকে দাবি উঠে আগের ভাড়ায় ফিরে যাওয়ার। সরকার তাই ১ সেপ্টেম্বর থেকে আগের ভাড়ায় যাত্রী পরিবহনের সিদ্ধান্ত নেয়। এক্ষেত্রে দেওয়া হয় কিছু শর্ত। এর মধ্যে হয়েছে, পরিবহনের চালকসহ কর্মীদের বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরতে হবে। বাসে বা গণপরিবহনে আসনের অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়া যাবে না। কিন্তু এসব শর্তের একটিও মানা হচ্ছে না।

নগরের সিমেন্ট ক্রসিং মোড়ে কথা হউ পোশাক শ্রমিক আফসানা, রবিন, লিটনের সঙ্গে। তারা জানান, বেশি ভাড়ার সময় অতিরিক্ত যাত্রী কিছুটা কম নিলেও এখনতো সেটা আর নেই। এখন গাদাগাদি করেই দাড়িয়ে যাত্রী নিচ্ছে। একজনের গায়ের সাথে লেগে অন্যজনের যাতায়াতের ফলে করোনা সংক্রমণ ঝুঁকি বেড়েছে। কার শরীর থেকে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ছড়ায় তা বলা যায়না।

মুরাদপুর মোড়ে কথা হয় তরকারি ব্যবসায়ী হাসমতের সঙ্গে। তিনি চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘বেশি ভাড়ার সময় ফতেয়াবাদ থেকে নিউমার্কেট যেতাম ৩০ টাকায়। এখন আগের ভাড়ায় ১৫ টাকার জায়গায় ২০ টাকা নিলেও অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়ার কারণে পা ফেলারও জায়গা নেই গাড়িয়ে। আগে বেশী ভাড়া নিলেও যাত্রী কিছুটা কম নিতো। এখন সেটি আর নেই।’

দাঁড়িয়ে যাত্রী পরিবহন কেন হচ্ছে- এমন প্রশ্নের জবাবে মেহদিবাগ মোড়ে ৩ নম্বর বাসের হেলপার মিন্টু বলেন, ‘অফিস শুরু ও ছুটির সময় ছাড়া যাত্রী পাওয়া যায়না। তাছাড়া অনেকে করোনার ভয়ে গাড়িতে উঠেনা। সিএনজি, রিকশায় যাতায়াত করেন। সমিতির টাকাসহ পথে আরো ট্যাকা খরচ হয়। তাই যাত্রী একটু বেশী নিচ্ছি।’

আগ্রবাদ মোড়ে গণপরিবহন চালক রবিউল বলেন, ‘দেশে এখন করোনা আর নেই। মুখে মাস্ক পরলে গরম লাগে। তাই পরিনা। এত নিয়ম মেনে গাড়ি চালাবো কেমনে। আল্লাহ ভরসা। কিছু হবে না।’

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রে আলী হাসান বলেন, ‘করোনাকালে বেশী ভাড়া আদায় ও স্বাস্থ্যবিধি না মানলে আমরা অভিযান চালিয়ে জরিমানা আদায় ও সতর্ক করছি। সবাইকে আইন ও স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে আরো সচেতন হতে হবে। গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি না মানলে সংক্রমণ ঝুঁকি থেকেই যায়।’

বিআরটিএ’র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নুরে জামান বলেন, ‘সরকারের আগের নির্দেশনা বাস্তবায়নে আমরা সড়কে অভিযান পরিচালনা করেছি। গণপরিবহনে আগের ভাড়া কার্যকরের পরও বিআরটিএ মাঠে থাকবে। স্বাস্থ্যবিধি ও ভাড়ার নিয়ম না মানলে জরিমানাসহ যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সবাইকে আইন মানার ব্যাপারে আরো সচেতন হতে হবে।’

সিএম/এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm