চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে চকবাজার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ থেকে দলীয় সমর্থন পাওয়া কাউন্সিলর সাইয়েদ গোলাম হায়দার মিন্টুর একটি ভিডিও নিয়ে নতুন করে বির্তক সৃষ্টি হয়েছে। এর আগে দলের মনোনয়ন ফরমে নিজকে চকবাজার থানা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা উল্লেখ করে বিতর্কে পড়েছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে একাট্টা হয়ে সংবাদ সম্মেলনও করেছেন চকবাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতারা।
সম্প্রতি, অনলাইনে একটি ভিডিও ঘুরপাক খাচ্ছে। যেখানে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের প্রশংসায় মেতে ওঠেন কাউন্সিলর মিন্টু। ওই ভিডিওর একটি অংশে তাকে বলতে শোনা যায়, ‘জিয়াউর রহমান যখন রাষ্ট্রপতি ছিলেন তখন তিনি আমাকে অনেক পছন্দ করতেন। তিনি আমাকে সবসময় ইয়াং কমিশনার মিন্টু বলে ডাকতেন। তিনি প্রতি তিন মাস অন্তর অন্তর চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে আসতেন। এসেই প্রথমে সভা করতেন আমাদের পৌরসভার সাথে। এখনো বেঁচে আছেন আমাদের তৎকালীন মন্ত্রী আরিফ মঈন উদ্দীন হেসেন। তিনিও আমাকে অনেক পছন্দ করতেন। সার্কিট হাউজে একদিন মিটিং শেষে আমি বারান্দায় পায়চারি করছিলাম। তখন আমাকে আরিফ মঈনউদ্দীন সাহেব দেখেন। তিনি আমাকে প্রশ্ন করেন আমি দাঁড়িয়ে আছেন কেনো? আমি বললাম একটু রাষ্ট্রপতির সাথে কথা বলবো তারপর তিনি আমাকে রাষ্ট্রপতি যেখানে বসে ছিলেন সেখানে ঢুকালেন। আমাকে বসালেন। রাষ্ট্রপতির সাথে তৎকালীন মন্ত্রী জামাল উদ্দীনও ছিলেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাকে দেখে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমনা বলেন, কী! মি. ইয়াং কমিশনার মিন্টু কী চায়? তখন আমি বললাম আমি কমিশনার না শুধু আমি চট্টগ্রাম বধির সংগঠনের সাথেও জড়িত। বধিরদের জন্য আমি একটি চাওয়া নিয়ে এসেছি। তাদের বিভিন্ন মিল ফ্যাক্টরিতে চাকরির জন্য। তখন তিনি হাসলেন। এরপর মিজান মহিউদ্দিন বলে উঠলেন- আজিয়ে বোবা হালিয়ে আঁধা, আতুর। তখন রাষ্ট্রপতি হাত তুলে তাঁকে বললেন বন্ধ করুন। একটা কথাও বলবেন না আপনি। রাষ্ট্রপতি আমাকে বলেন, ‘তোমার যত বধিরদের চাকরির দরকার দরখাস্ত রেডি করে আমার কাছে তাদের পাঠিয়ে দিবে। তাদের আমি চাকরি দিবো।’
‘এই কথা শুনে সাথে সাথে আমি বাসায় এসে ছয়টি দরখাস্ত রেডি করি এবং বধিরদের প্রশিক্ষণ দেই তারা কিভাবে রাষ্ট্রপতির কাছে গিয়ে দরখাস্ত জমা দিবে। এরপর তারা গেলে দারোয়ান তাদের বাধা দেন তখন বিষয়টি রাষ্ট্রপতি খেয়াল করেন। এবং তাদের ভিতের প্রবেশ করাতে বলেন। এরপর আমার প্রশিক্ষণ মতো তারা ঠিক রাষ্ট্রপতিকে স্যালুট দেয় এবং দরখাস্ত তাঁর টেবিলের উপর রাখে। সাথে সাথে তাদের ছয় জনের চাকরি দেন তিনি। এরপর ৩বার করে আরো ১৮ জনকে চাকরি দেন। এরপর আবার ৬জনকে। মোট ২৪ জনকে চাকরি দেন।’
কাউন্সিলর মিন্টুকে আরও বলতে শোনা যায়, ‘এরপর রাষ্ট্রপতি আরিফ মঈনউদ্দীনকে বলেন মি. ইয়াং কমিশনার মিন্টুকে চিনি (বিরাট একটি ব্যবসা) দাও। আমি নেইনি কারণ রাষ্ট্রপতির মতাদর্শ আর নীতির সাথে আমার নীতির মিল ছিলোনা। এরপর ৩/৬ মাস পর আবার আরিফ মঈনউদ্দীনকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, মি. ইয়াং কমিশনারকে চিনি দিয়েছেন। তিনি জবাব দিলেন না স্যার তিনি নেননি। এরপর রাষ্ট্রপতি বলেন তাহলে তাকে পেপার, পত্রিকা দাও। এটা শুনে একটু খুশি লাগলো কিন্তু আবার বেজারও লাগলো।আমি চিনি নেইনি কিভাবে পত্রিকা নিবো। নিলেতো আমি আবার উনার তৈলপিপার হয়ে যাবো। উনার আসল উদ্দেশ্য ছিলো আমাকে দিয়ে জাগো দলের কাজ করানো। আমি জাগো দলে কাজ করবো এই খেয়ালে তিনি চেয়েছিলেন আমাকে এসব কাজে দিলে আমি জাগোদলে কাজ করবো।’
এনজে/এডি/এসএস