ঢাকায় এক তরুণকে হত্যার মামলায় এবার সময় টেলিভিশনের দুই শীর্ষ কর্মকর্তাসহ আওয়ামী লীগপন্থী ১২ সাংবাদিককে মামলার আসামি করা হয়েছে। ওই একই মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তানিয়া আমীর, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবিরসহ ২৯৭ জনকে আসামি করা হয়েছে।
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে ইমরান হোসেন নামের এক তরুণকে হত্যার অভিযোগে তার মা কোহিনূর আক্তার রোববার (১ সেপ্টেম্বর) বাদী হয়ে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় এ মামলা করেন।
আওয়ামী লীগপন্থী যে ১২ সাংবাদিককে মামলার আসামি করা হয়েছে, তারা হলেন— ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, একুশে টিভির সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মনজুরুল আহসান বুলবুল, একাত্তর টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল বাবু, একাত্তর টিভির সাবেক উপস্থাপক মিথিলা ফারজানা, সময় টেলিভিশনের উপদেষ্টা মোরশেদুল ইসলাম, সাংবাদিক সুভাষ সিংহ রায়, একাত্তর টিভির সাবেক বার্তাপ্রধান সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, সাংবাদিক নজরুল কবীর, সময় টেলিভিশনের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ জোবায়ের, এটিএন নিউজের সাবেক বার্তাপ্রধান মুন্নী সাহা, একাত্তর টিভির সাবেক সাংবাদিক ফারজানা রুপা ও শাকিল আহম্মেদ।
তাদের অনেকের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার গণআন্দোলন চলাকালে আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষ হয়ে উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে।
ওই হত্যা মামলায় এছাড়া আরও আসামি হয়েছেন ক্ষমতাচ্যূত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, জাতীয় পার্টির (জেপি–মঞ্জু) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর মেয়ে তারিন হোসেন মঞ্জু, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, সাবেক মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন, সাবেক প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু, আওয়ামী লীগ নেতা ও ১৪ দলের মুখপাত্র আমির হোসেন আমু, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত, সাবেক মন্ত্রী তাজুল ইসলাম ও সালমান এফ রহমান, সাবেক শিক্ষাসচিব নজরুল ইসলাম খান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী ও মোখলেছুর রহমান বাদল, সাবেক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহের হোসেন সাজু।
মামলার এজাহারে লেখা হয়েছে, বাদির ছেলে ইমরান একজন মেধাবী ছাত্র। তার ছেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। গত ৫ আগস্ট সকাল নয়টায় যাত্রাবাড়ীর কুতুবখালীতে বিভিন্ন স্কুল–কলেজের ছাত্র ও সাধারণ জনতার আন্দোলনে ইমরান অংশ নেন। তখন আন্দোলনকারীদের শান্তিপূর্ণ অবস্থানকে নস্যাৎ করতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আসামিরা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে উপর্যুপরি এলোপাতাড়ি গুলি, পেট্রলবোমা, ককটেল বিস্ফোরণ, হাতবোমা ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। শান্তিপূর্ণ মিছিল নিয়ে যাত্রাবাড়ী থানার সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় ইমরান গুলিবিদ্ধ হন। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সন্ধ্যায় চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।