আউটার স্টেডিয়ামে মেট্রোপলিটন চেম্বারের মাসব্যাপী বাণিজ্য মেলা উদ্বোধন

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির আয়োজনে রোববার (২৭ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রাম আউটার স্টেডিয়ামে মাসব্যাপী ৬ষ্ঠ বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা ২০১৯ উদ্বোধন করা হয়েছে। প্রধান অতিথি হিসেবে মেলার উদ্বোধন করেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সি এমপি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রচারেই প্রসার। যত বেশি প্রচার হবে, তত প্রসারিত হবে ব্যবসা । চট্টগ্রাম বাণিজ্যিক নগরী। আমি মন্ত্রী হয়েছি দশ মাস হলো। তার আগে থেকেই আমি একজন ব্যবসায়ী। মাঝে মাঝে নিজেকে মন্ত্রী ভাবি না, ব্যবসায়ী মনে করি। চট্টগ্রামের মানুষ আমাকে অনেক ভালোবাসে। আমি যখন প্রথম চট্টগ্রামে আসি, চট্টগ্রামের মানুষ আমায় কাছে টেনে নিয়েছিল। সেই থেকে চট্টগ্রাম আসতে আমার ভালো লাগে। সকলেই চায় চট্টগ্রামের সাথে কাজ করতে। সবাই মিলে চট্টগ্রামকে আরো অনেকদূর নিয়ে যেতে হবে।’

তিনি আরো বলেন, আমি ২৫ বছর ধরে তৈরি পোশাকশিল্পের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। ৪৫ বছর ধরে ব্যবসায় আছি। ৫৩ বছর ধরে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে খুবই গর্বিত। কিন্তু আমি আরো বেশি গর্বিত, কারণ আমি মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। আমরা বাবা-ছেলে দুজনই একসাথে মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেছিলাম।
তিনি আরো বলেন, কোনো জিনিসকে ছোট করে দেখতে নেই। সে ছোট জিনিসটাই একদিন অনেক বড় আকারে রূপ নেবে। কোনো কাজকে ছোট করা যাবে না। বাণিজ্যে বসতি লক্ষ্মী- কথাটা ছোটবেলা থেকে শুনে এসেছি। এখন শুনি প্রচারেই প্রসার। এ দুইটির মেলবন্ধন হচ্ছে চট্টগ্রাম। এ মেলার উদ্দেশ্য হলো আমাদের প্রোডাকশন বাড়ানো। পণ্যের প্রচারের মাধ্যমেই প্রোডাকশন বাড়ানো যাবে।

ভারত সফরের কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করতে চায় পূর্ব ভারতের ৫ কোটি মানুষ। এতে কর্মসংস্থান বাড়বে। বন্দরের সক্ষমতা বাড়বে। পূর্ব ভারতের মানুষকে ১২০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হয় কলকাতা বন্দরে যেতে। চট্টগ্রাম বন্দর হলে অর্ধেক পথ কমবে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন সোনার বাংলাদেশের। তাকে হত্যা করা হয়েছিল এ স্বপ্ন যেন পূরণ না হয়। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকরীরা দেশের স্বাধীনতা চায়নি। ওইদিন জয়বাংলা স্লোগান স্তব্ধ করে দেয়া হয়েছিল। বাংলাদেশ এখন পৃথিবীর বিস্ময়। এটি সম্ভব করেছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণে অনেক পরিশ্রম করছেন। ১০ মাসে ২৫-৩০টি দেশ ঘুরেছি। সবার প্রশ্ন, বাংলাদেশের উন্নতির চাবিকাঠি কি? ২০২১ সাল হবে আমাদের মাইলস্টোন। ৬০ বিলিয়ন ডলার আমাদের রপ্তানি টার্গেট।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার মো. মাহাবুবর রহমান বলেন, মেলার মাধ্যমে নগরে বাণিজ্যের দ্বার উন্মোচিত হবে। দেশ এগিয়ে চলেছে, এটিই বাস্তবতা। ব্যবসায়িক পরিবেশ তৈরির মূল শর্ত আইন-শৃঙ্খলার উন্নয়ন। হলি আর্টিজান, শোলাকিয়ার মতো আরেকটি ঘটনা ঘটলে জাপানিসহ বিদেশিরা মুখ ফিরিয়ে নিত। অনেক পুলিশ সদস্য জীবন দিয়ে অশুভ শক্তিকে প্রতিহত করেছে।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন সিএমসিসিআই সভাপতি ও কেডিএস গ্রুপের চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান। সিএসসিসিআই সহ-সভাপতি এএম মাহবুব চৌধুরী, এস আলম গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুস সামাদ লাভু।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিএসসিসিআই সহ-সভাপতি এএম মাহবুব চৌধুরী, সহ-সভাপতি জসিম উদ্দিন, পরিচালক প্রফেসর জাহাঙ্গীর চৌধুরী, আবু তাহের, আমির আলী হোসেন, হামিদুল হক, এম. সোলায়মান, শিরিন আক্তার, মো. শফি ও মেলা কমিটির আহ্বায়ক আমিনুজ্জামান ভূঁইয়া।
মেলায় এ বছর ২৪০টি স্টল, চারটি প্যাভিলিয়ন, কিডস্ জোন ও খাবারের দোকান থাকবে। মাসব্যাপী এই মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে চলবে রাত ১০টা পর্যন্ত। মেলায় প্রবেশমূল্য ধরা হয়েছে ১০ টাকা।

মেলা স্পন্সর করছে কেডিএস, বিএসআরএম, দৈনিক আজাদী, দৈনিক পূর্বকোণ, প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ইউসিবি ব্যাংক, এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক সহ আরো কয়েকটি প্রতিষ্ঠান।

এনজে/সিআর

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!