চট্টগ্রামের আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যার অভিযোগে ৩১ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) রাতে নিহত সাইফুলের বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালি থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলার এজাহারে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ইন্ধনের অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলায় ৩১ জনের নাম উল্লেখ করার পাশাপাশি অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১০ থেকে ১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন—চন্দন দাস, আমান দাস, শুভ কান্তি দাস, রনব, বিকাশ, বিধান, রমিত দাস, নয়ন দাস, গগন দাস, বিশাল দাস, ওমকার দাস, লালা, সোহেল দাশ, শিবকুমার, গণেশ, রাজকাপুর, পপি, দেব, অজয়, সামির, বিগলাল, পরাশ, দেবী চরণ, জয়, দুর্লভ দাস, রাজীব ভট্টাচার্য্য প্রমুখ। আসামিদের বেশিরভাগই হত্যার ঘটনাস্থলের নিকটবর্তী সেবক কলোনির পরিচ্ছন্নতাকর্মী।
হত্যাকাণ্ডের ভিডিও দেখে পুলিশ এদের মধ্যে নয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এর মধ্যে হত্যাকাণ্ডের সময় চন্দন কমলা রঙের গেঞ্জি ও হেলমেট পরিহিত চন্দন দাসকে মামলায় এক নম্বর আসামি করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে আইনজীবী আলিফকে কোপাতে দেখা গেছে চন্দনকে। ধারালো অস্ত্র দিয়ে আইনজীবী সাইফুলকে আরও কোপান ওম দাশ, চন্দন ও রনব। অন্যরা লাঠিসোঁটা দিয়ে বেধড়ক পেটাতে থাকেন আলিফকে।
এদিকে আদালত প্রাঙ্গণে আইনজীবীদের ওপর হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ ১১৫ জনের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করেন আইনজীবী আলিফের বড় ভাই খানে আলম।
এর আগে গত সোমবার (২৫ নভেম্বর) রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। পরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করার পর মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে তাকে চট্টগ্রাম আদালতে মহানগর হাকিম ষষ্ঠ কাজী শরীফুল ইসলামের আদালতে তোলা হয়। শুনানি শেষে দুপুর ১২টা ২০ মিনিটের দিকে চিন্ময় কৃষ্ণকে প্রিজনভ্যানে ওঠানো হয়। তবে তার অনুসারীরা এ সময় বাধা দিলে প্রিজনভ্যানটি প্রায় তিন ঘন্টা সেখানে আটকে থাকে। পরে পুলিশ আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দিতে চাইলে বিকেল তিনটার দিকে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। আন্দোলনকারী এ সময় আদালত এলাকার একটি মসজিদসহ বেশ কয়েকটি স্থাপনা ভাঙচুর করে। পুলিশও এ সময় কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়ে। লাঠিচার্জও করে। পরে চিন্ময় কৃষ্ণকে চট্টগ্রাম কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে এডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফ চট্টগ্রাম আদালত ভবনের প্রধান প্রবেশপথ দিয়ে বেরিয়ে সড়কের উল্টোপাশে সরকারি মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ের দিকে যাচ্ছিলেন। ওই সময় ধারালো অস্ত্রধারী একদল যুবক তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপায়। এডভোকেট সাইফুল হাত, মাথা ও পায়ে গুরুতর আঘাত পান। মুমূর্ষূ অবস্থায় সাইফুলকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
আরএ/এমএহক