আইআইইউসি ছাত্রকে পাসপোর্টের দালালরাই খুন করে হাতিরঝিলে ফেলে যায়

পাসপোর্ট সংশোধনের জন্য আড়াই লাখ টাকা দিয়েছিলেন দালালকে। কিন্তু কাজ না হওয়ায় টাকা ফেরত চাইতে ঢাকায় যান চট্টগ্রামের ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটির (আইআইইউসি) ছাত্র আজিজুল ইসলাম মেহেদী। এই পাওনা টাকা চাইতে যাওয়াই কাল হয়েছে মেহেদীর। পাসপোর্টের দালালরাই তাকে কৌশলে গলায় গামছা পেচিয়ে হত্যা করে হাতিরঝিলে ফেলে যায়।

বুধবার (১৪ অক্টোবর) এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে চারজনকে গ্রেপ্তারের পর বেশ কিছু গুরুত্বপূণ তথ্য পেয়েছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাতেই ঢাকার হাতিরঝিল থানার পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে আহসান, তামিম, আলাউদ্দিন ও রহিম নামের চারজনকে গ্রেপ্তার করে। এরা সবাই পাসপোর্টের দালালির কাজ করেন।

বুধবার এক ব্রিফিংয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার হারুন অর রশীদ জানান, নিহত মেহেদী তিনটি পাসপোর্টের নাম ও বয়স সংশোধনের জন্য আহসানকে আড়াই লাখ টাকা দেন। কিন্তু পরে কাজ না হওয়ায় টাকা ফেরত চাইতে গেলে কৌশলে কালক্ষেপণ করছিলো আহসান ও তার সহযোগীরা।

তিনি জানান, পরে মেহেদী ঢাকায় এলে তাকে কৌশলে আহসান তার খিলক্ষেতের বাসায় ডেকে নিয়ে প্রথমে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে এবং পরে গলায় গামছা পেচিয়ে হত্যা করে হাতিরঝিলের পানিতে ফেলে যায়।

এ ঘটনায় পাসপোর্ট অফিসেরও কেউ জড়িত থাকতে পারে বলে ধারণা করছে পুলিশ।

সোমবার (১২ অক্টোবর) হাতিরঝিলের রামপুরা অংশের লেক থেকে পুলিশ মেহেদীর লাশ উদ্ধার করে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে প্রাথমিকভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে, মেহেদীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটির (আইআইইউসি) ইংরেজি বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র আজিজুল ইসলাম মেহেদীর (২৪) লাশ উদ্ধার করা হয় ঢাকার হাতিরঝিল লেক থেকে। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় পাসপোর্টের কাজে এসে দালালের খপ্পরে পড়ে খুন হন বলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছে।

মেহেদী চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার বাউরিয়া গ্রামের ফখরুল ইসলামের একমাত্র ছেলে।

তার পারিবারিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, শনিবার (১০ অক্টোবর) বিকাল ৫টার দিকে পাসপোর্ট করানোর কথা বলে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় যান মেহেদী। পরে বনশ্রীতে তার বন্ধুর বাসায় ওঠেন। রোববার ভোরে বাসা থেকে বের হওয়ার পর থেকেই মেহেদীর আর কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। তার ফোন নম্বরও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল।

মেহেদীর মামাতো ভাই সাফায়েত উল্লাহ বলেন, ‘মঙ্গলবার ভোর ৬টার দিকে হাতিরঝিল থানা পুলিশ মোবাইল ফোনে আমাদের একটি অজ্ঞাতপরিচয় মরদেহ উদ্ধারের কথা জানায়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে এসে মরদেহ দেখতে বলে।’

মেহেদীর খালাতো ভাই মোহাম্মদ শাকিল বলেন, ‘মেহেদী লেখাপড়ার পাশাপাশি পরিচিতদের পাসপোর্টের কাজ করে দিতো বলে জানতাম। পরিচিত কারও পাসপোর্টের সমস্যা থাকলে সে বিভিন্ন জায়গায় দৌড়াদৌড়ি করে ঠিক করে দিতো। আমাদের ধারণা, সে পাসপোর্ট করানোর জন্য এসে দালালদের খপ্পরে পড়েছে। আর এ কারণেই তাকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে।’

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!