অ্যাশেজে অস্ট্রেলিয়ার অপেক্ষার অবসান

আঠারো বছর ইংল্যান্ডের মাটিতে অ্যাশেজ জিতল অস্ট্রেলিয়া

২০০১ সালে শেষ বার ইংলিশদের মাটিতে জিতেছিল অ্যাশেজ। এরপর গত ১৮ বছর ইংল্যান্ডের মাটিতে আর অ্যাশেজ জেতেনি অস্ট্রেলিয়া। ওল্ড ট্রাফোর্ডে হ্যাজেলউড ক্রেইগ ওভারটনকে এলবিডাব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলে আউট করার সাথে সাথে বুনো উল্লাসে মাতে অজিরা। ইংলিশদের ১৮৫ রানে হারিয়ে অ্যাশেজ ধরে রাখল অস্ট্রেলিয়া। ৪ টেস্ট শেষে ২-১ এ এগিয়ে টিম পাইনের দল। শেষ ম্যাচে হারলেও শতবর্ষ পুরনো এই ট্রফিটা হাতছাড়া হচ্ছে না তাদের।

ওল্ড ট্রাফোর্ডে কী হতে চলেছে তার ধারণা আগেই মিলেছিল। তবে রোমাঞ্চের শেষ দেখতে অপেক্ষা করতে হয়েছে পঞ্চম দিনের শেষ ভাগ পর্যন্ত। এক পাশে ঠাই হয়ে দাঁড়িয়ে থেকে ১০৫ বলের লম্বা ইনিংস খেলে ইংলিশদের অ্যাশেজ বাঁচাতে চেষ্টার কোনো কমতি রাখেননি ক্রেইগ ওভারটন।

আর সেই সাথে নিজের সম্মান আর অ্যাশেজ বাঁচাতে কম চেষ্টা করেনি হেডিংলি টেস্টের রূপকথার আর এক নায়ক জ্যাক লিচও। ওভারটনকে যোগ্য সঙ্গী হিসেবেই সঙ্গ দিচ্ছিলেন তিনি, ঠিক যেমনটা দিয়েছিলেন বেন স্টোকসকে। ৫১ বল খেলে ইংলিশদের আশা দেখাচ্ছিলেন লিচ আরও এক রূপকথার জন্ম দেওয়ার। তবে পার্ট টাইম বোলার লাবুসের ঘূর্ণিতে পরাস্ত হয়ে যখন ফিরে গেলেন তখন ইংলিশদের আশার প্রদীপ নিভু নিভু।

লিভ আউট হয়ে ফিরে গেলে উইকেটে আসেন স্টুয়ার্ট ব্রড। এরপর ইনিংসের ৯১তম ওভারের তৃতীয় বলে হ্যাজেলউডের বল এসে সোজা পায়ে লাগে ওভারটনের। প্রায় তিন ঘণ্টা উইকেটে থাকা ওভারটন যেন পড়তেই পারলেন না বলটি। আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনার কাছে আবেদন করতেই আঙুল উঁচু করে বলে দিলেন আউট। সাথে সাথেই আম্পায়ারকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন ওয়ারটন। তবে তৃতীয় আম্পায়ার জানিয়ে দিলেন কোনো ভুল নেই ধর্মসেনার সিদ্ধান্তে। আর এতেই ১৮ বছর পর ইংলিশদের মাটিতে অ্যাশেজ জয়ের উল্লাসে মাতোয়ারা অজিরা।

এর আগে চতুর্থ দিন শেষে ২ উইকেটে হারিয়ে মাত্র ১৮ রান তুলে সেদিনের খেলার ইতিটানে জো রুটের দল। পঞ্চম দিনে ম্যাচ জয় কিংবা ড্র করতে ইংলিশদের হাতে ছিল ৮ উইকেটে আর ৩৬৫ রান। তবে হেডিংলির মতো আরও এক রূপকথার সৃষ্টি না হলে এই ম্যাচ থেকে জয় ছিনিয়ে নেওয়া অসম্ভবই ছিল ইংলিশদের জন্য। তবে ১৯৭ রানে অলআউট হওয়া ইংলিশদের আর রূপকথার সৃষ্টি হয়নি।

স্টিভেন স্মিথকে অন্য পাশে সরিয়ে রাখলে অজিদের জয়ের নায়ক বলা চলে দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ উইকেট নেওয়া প্যাট কামিন্স। ইংল্যান্ডের রানের খাতা খোলার আগে চতুর্থ দিনের শেষ ভাগেই জো বার্ন্স আর জো রুটের উইকেট তুলে নিয়েছিলেন কামিন্স। আর পঞ্চম দিনে ৭৪ রান যোগ করতে ইংলিশর আরও যে দুই উইকেট হারিয়েছিল সে দুইটিও গিয়েছে কামিন্সের ঝুলিতেই। কামিন্সের পর বাকি কাজ সারেন নাথান লায়ন এবং হ্যাজেলউড। এই দুই অজি উভয়ই দু’টি করে উইকেট তুলে নেন।

ওল্ড ট্রাফোর্ডের ম্যাচ জিতে এবারের অ্যাশেজে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে গেল অস্ট্রেলিয়া। ওভালে শেষ টেস্ট জিতলেও ইংল্যান্ড পারবে না অ্যাশেজ জিততে। অ্যাশেজ রয়ে যাবে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার কাছেই। ১৮ বছর পর অ্যাশেজ ধরে রেখে বাড়ি ফিরবে স্মিথরা।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!