অস্ত্র নিয়ে ধরা আসামি চট্টগ্রামে স্কুল কমিটির সভাপতি, ভয়ে ভোটই হয়নি

জেল হাসপাতালে আয়েশে কাটছে দিন

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশের ‘তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী’কে চট্টগ্রাম এক স্কুলের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি বানাতে প্রস্তাব গেছে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে। অথচ গত ৩০ ডিসেম্বর অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার ওই পুলিশ হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি এখনও কারাবন্দি। অনেকটা তার চাপের মুখেই সভাপতি হিসেবে তার নাম প্রস্তাব করা হয়েছে।

এই ‘সন্ত্রাসী’কে সভাপতি করার প্রস্তাব পাঠানোর ঘটনায় নানান বিতর্ক দেখা গিয়েছে ওই স্কুলে।

অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম রবিউল আলম সমীর। তিনি সন্দ্বীপের মগধরা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য। দক্ষিণ পূর্ব সন্দ্বীপ উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি হতে চাইছেন তিনি।

সম্প্রতি কারাগারে সুস্থ থাকার পরেও জেল হাসপাতালে ভর্তি হয়ে বিশেষ সুবিধা নিচ্ছেন তিনি— এমন অভিযোগে গণমাধ্যমে এসেছে সমীরের নাম।

অথচ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিচালনা কমিটি গঠন ও অনুমোদন বিষয়ক এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ধ্বংসাত্মক কোনো কাজে অংশগ্রহণ বা সহায়তা করলে তিনি পরিচালনা কমিটিতে থাকতে পারবেন না।

অভিযোগ রয়েছে, বিদ্যালয়টি নিজের কব্জায় নিতে ম্যানেজিং কমিটি সদস্যের ‘হুমকি’ দিয়ে সভাপতি পদে বসতে চাইছেন সমীর।

নিয়ম অনুযায়ী, পরিচালনা কমিটি সদস্যদের প্রত্যক্ষ ভোটে সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। সভাপতি পদের জন্য পরিচালনা কমিটি থেকে একজন প্রস্তাবকারী ও সমর্থনকারী থাকার বিধান রয়েছে।

কিন্তু এসব নিয়মের তোয়াক্কা না করে সদস্যদের মিটিংয়ে ভোট ছাড়াই সমীরকে সভাপতি করা হচ্ছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ম্যানেজিং কমিটির এক সদস্য বলেন, ‘গত বছরের ২৬ নভেম্বর সদস্যদের মিটিং ছিল। সেখানে কোনো ভোট ছাড়াই সমীরকে সভাপতি হিসেবে রেজুলেশন করা হয়। এটি নিয়ে পরে তার ভয়ে কেউ কথা বলেনি। প্রধান শিক্ষকও ভয়ে আছেন। তিনিও অসহায়।’

এবিষয়ে জানতে চাইলে দক্ষিণ পূর্ব সন্দ্বীপ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আকতার হোসাইন মুঠোফোনে চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘সদস্যদের ভোটে সভাপতি সমীরকে নির্বাচিত করা হয়েছে। সেটি রেজুলেশন করে ফাইনাল অনুমোদনের জন্য বোর্ডে পাঠানো হয়েছে।’

আসামিকে ভোট ছাড়াই সভাপতি নির্বাচিত করার অভিযোগের কথা তুলতেই ব্যস্ত আছেন বলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন প্রধান শিক্ষক।

চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক ড. বিপ্লব গাঙ্গুলী চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘সদস্যরা সভাপতি নির্বাচিত করেন। এখানে আমাদের কোনো হাত নেই। আমি তাকে চিনি না, জানিও না। অনিয়ম হলে আমাদের জানাতে হবে। না জানলে কিভাবে ব্যবস্থা নেবো? আপনার কাছ থেকে বিষয়টি জানলাম। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আরএম/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm