কক্সবাজারের টেকনাফে ১২ জন ইয়াবা কারবারির বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং আইনে মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তাদের বিরুদ্ধে প্রাথমিক অনুসন্ধানে তথ্য-প্রমাণ পেয়েছে সিআইডি। এছাড়া আরও ৮ শীর্ষস্থানীয় ইয়াবা ব্যবসায়ীর বিপুল সম্পদের তথ্য এখন সিআইডির হাতে।
অনুসন্ধান শেষে শুক্রবার (২১ মার্চ) এসব ইয়াবা কারবারির বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে টেকনাফ থানায় ১২টি মামলা দায়ের করেছে সংস্থাটি।
ইয়াবা কারবারিরা হলেন আবদুস শুকুর, আমিনুর রহমান, শফিকুল ইসলাম শফিক, ফয়সাল রহমান, একরাম হোসেন, নুরুল কবির, মো. জামাল মেম্বার, মোহাম্মদ আলী, নুরুল হুদা মেম্বার, আবদুর রহমান, শাহ আজম ও এনামুল হক এনাম মেম্বার।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি আত্মসমর্পণকারী ১০২ মাদককারবারির মধ্যে এ ১২ জনও ছিলেন। ইয়াবা ব্যবসার মাধ্যমে অর্জিত তাদের সব সম্পদ বাজেয়াপ্ত এবং ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হবে।
সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারুক হোসেন জানান, ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসা করে বিপুল অর্থ উপার্জনের অভিযোগে টেকনাফ থানায় ১২ আসামির বিরুদ্ধে ১২টি মানিলন্ডারিং মামলা হয়েছে। গত কয়েকমাস তাদের বিরুদ্ধে থাকা অভিযোগ অনুসন্ধান করেন সিআইডির ৮জন তদন্তকারী কর্মকর্তা। এতে মাদক ব্যবসার মাধ্যমে অর্থ উপার্জন, বাড়ি এবং অন্যান্য সম্পদ অর্জনের তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে। প্রাথমিক অনুসন্ধানে আবদুস শুকুরের ১ কোটি ৩০ লাখ টাকার সম্পদ কেনার তথ্য পাওয়া যায়। ইয়াবার টাকায় তিনি এ সম্পদ গড়েছেন। এর বাইরেও তিনি ইয়াবার টাকায় বিপুল পরিমাণ সম্পদ গড়েছেন বলে তথ্য মিলেছে। তার বিরুদ্ধে তিনটি মাদক মামলাও চলমান। আমিনুর রহমান ও শফিকুল ইসলাম শফিকের বিরুদ্ধেও ইয়াবার টাকায় সম্পদ গড়ে তোলার তথ্য পাওয়া গেছে। একাধিক বাড়ি ও গাড়ির মালিক হয়েছেন তারা। নামে-বেনামে গড়েছেন বিপুল সম্পদ। তবে তারা কী পরিমাণ সম্পদ গড়েছেন এ বিষয়ে এখনো পুরোপুরি তথ্য পাওয়া যায়নি।
এর মধ্যে আমিনুরের বিরুদ্ধে পাঁচটি এবং শফিকুলের বিরুদ্ধে তিনটি ইয়াবার মামলা চলমান। ফয়সাল রহমানের ব্যাংক অ্যাকাউন্টেও বিপুল পরিমাণ অর্থ লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। ইয়াবার টাকা তিনি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমেই লেনদেন করতেন। তার বিরুদ্ধে চারটি ইয়াবার মামলা চলমান। একরাম হোসেনের বিরুদ্ধে ১৩টি ইয়াবার মামলা চলমান। তিনি নামে-বেনামে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন। মাদকের টাকায় কিনেছেন অনেক জমি। নুরুল কবির ইয়াবার টাকায় এ পর্যন্ত সাড়ে ৩ কোটি টাকার জমি কিনেছেন বলে তথ্য মিলেছে। জামাল মেম্বারের বিরুদ্ধে ১১টি ইয়াবার মামলা চলমান। তিনি নামে-বেনামে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন। ১১টি ইয়াবার মামলা মাথায় থাকা মোহাম্মদ আলী একটি বিলাসবহুল গাড়ির মালিক। ইয়াবার টাকায় কিনেছেন প্রায় এক একর জমি। নুরুল হুদা মেম্বারের বিরুদ্ধে ১৬টি, আবদুর রহমানের বিরুদ্ধে নয়টি, শাহ আজমের বিরুদ্ধে ১১টি এবং এনামুল হক এনাম মেম্বারের বিরুদ্ধে ১২টি ইয়াবার মামলা চলমান। তারা ইয়াবার টাকায় নামে-বেনামে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন।
এএইচ