অযূ করার মত গ্লাভস পরে কম্পিউটার ধরতে হতো, পোর্টসিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পানিসম্পদ উপমন্ত্রী

বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ার সময় অযু করার মত গ্লাভস পরে কম্পিউটার ধরতে হতো বলে জানিয়েছেন পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুর হক শামিম।

তিনি বলেন, ‘আমরা যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছি, শুধু লাইব্রেরিতে একটা-দুটা কম্পিউটার থাকতো। আমাদের সবাইকে অযূ করার মত গ্লাবস পরে যেতে হতো সেখানে। এখন সবার মোবাইল হচ্ছে কম্পিউটার।’

শনিবার (২১ মে) দুপুরে চট্টগ্রামের পোর্টসিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে সামার ২০২২ ট্রাইমিস্টারের নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, ‘তোমরা সৌভাগ্যবান। তোমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মত একজন সরকার পেয়েছো। তিনি ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে নিয়ে সবসময় ভাবেন। তিনি সবসময় বলেন, এই দেশকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য করে যাব। আমরা যারা এখানে আছি, আমরা নাইন-টেনে যখন পড়তাম, বই পেতাম ৬-৭ মাস পর। আমাদের বড়ভাইদের পুরোনো বই পড়তে হতো। আর এখনকার প্রজন্ম এই কোভিডের মধ্যেও ১ জানুয়ারি ৩৮-৩৯ কোটি বই পেয়ে যাচ্ছে। সেই উপকূলীয় অঞ্চলে, হাওড় অঞ্চলে, চরাঞ্চলে আমরা বই পৌঁছে দিই প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে। তোমরা ডিজিটাল যুগের ছেলেমেয়ে।’

ডিজিটাল বাংলাদেশ হওয়ায় করোনা মোকাবেলা সম্ভব হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘২০০৮ এ যখন আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বলা হলো, তখন অনেক রাজনৈতিক দল আমদের টিপ্পনি করেছেন, যে ডিজিটাল বাংলাদেশ কীভাবে সম্ভব! আজকে যদি প্রধানমন্ত্রী এবং সজীব ওয়াজেদ জয়ের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে ডিজিটাল বাংলাদেশ না হতো , তাহলে বাংলাদেশ কোভিড কীভাবে মোকাবেলা করতো?’

‘প্রধানমন্ত্রী জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, একবারে স্বাস্থ্যকর্মীসহ সবার স্ঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন অনলাইনে। অনলাইনে ক্লাস হয়েছে। তোমাদের শিক্ষা জীবন কিন্তু ব্যাহত হয়নি। এসব ডিজিটাল বাংলাদেশের কারণে। প্রধানমন্ত্রী শুধু স্বপ্ন দেখেন না। তিনি স্বপ্ন দেখেন, স্বপ্ন দেখান এবং সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেন। ‘

পোর্টসিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মানকে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা যখন প্রধানমন্ত্রীকে বলেছিলাম, চট্টগ্রামে আমরা একটি বিশ্ববিদ্যালয় করতে চাই, তিনি আমাদের অনুমতি দিলেন। পোর্টসিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি কয়তলা ভবন, এখানে এসিরুম আছে কি নাই তা আমাদের বিবেচ্য বিষয় না। শুরু থেকে আমাদের একমাত্র এবং প্রধান আলোচ্য বিষয় ছিল এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভালো পড়াশোনা হয় কিনা। এটাকে টার্গেট রেখেই আমরা এই প্রতিষ্ঠান শুরু করি। আমাদের শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রেও আমরা শুরু থেকে স্বচ্ছ ছিলাম। আমদের শতাধিক শিক্ষক আছেন এখন, তারা সবাই প্রথম বিভাগের।’

‘প্রথম বিভাগের বাইরে আমাদের কোনো ফ্যাকাল্টি নেই। আমাদের কিছু শিক্ষক আছেন যারা এই চট্টগ্রাম তো বটেই, সারাদেশেই ওনার রিনাউন্ড প্রফেসর। প্রত্যেকেই স্ব স্ব ক্ষেত্রে সুপ্রতিষ্ঠিত।’

আগামী বন্যা এবং বর্ষাকে সামনে রেখে যেন ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলো যেগুলোতে নদী ভাঙনের সম্ভাবনা আছে। বিশেষ করে বাঁশখালী, সন্দ্বীপ, কুতুবদিয়া এসব এলাকা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬৭ জন মেধাবী শিক্ষার্থীকে রত্নগর্ভা বেগম আশরাফুন্নেসা ফাউন্ডেশন থেকে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে বৃত্তি প্রদান করা হয়। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ব্যাচের ৫ কৃতি শিক্ষার্থী এবং প্রতিষ্ঠাকালীন শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্য থেকে ১২ জনকে দেওয়া হয় সম্মাননা স্মারক ও ক্রেস্ট।

নবীনবরণ উপলক্ষে এইদিন বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নূরল আনোয়ারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য অধ্যাপক ড. এম মুজিবুর রহমান, মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন, মো. মিজানুর রহমান, মোহাম্মদ আলী আজম স্বপন, ডা. জাহানারা আরজু, রেজিস্ট্রার ওবায়দুর রহমান প্রমুখ।

ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!