অভয়মিত্রের খেয়াঘাট হয়ে উঠছে বন্দরের আধুনিক জেটি

বছরে ২৫ কোটি টাকা আয়ের আশা

আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই চালু হবে অভয়মিত্র ঘাটের লাইটার জাহাজ জেটি। এখানে চার ধরনের পণ্য খালাস হবে। এতে বন্দরের আয় হবে বার্ষিক ২৫ কোটি টাকা।

জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে খেয়াঘাট হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসা অভয়মিত্র ঘাটকে জেটি আকারে ব্যবহার করবে বন্দর কর্তৃপক্ষ। টেন্ডারের মাধ্যমে ইজারা দেওয়া হবে এ জেটি। আর সেটি পুরোদমে চালু হবে এ বছরের ডিসেম্বরে।

গত ২০১৬ সালে অভয়মিত্র ঘাটকে জেটিতে রূপান্তর করা হয়। কিন্তু কর্ণফুলী ড্রেজিং না হওয়ায় এতোদিন এটি ব্যবহার করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। তবে সম্প্রতি এ স্থানে ড্রেজিং করে জাহাজ ভিড়ানোর মতো গভীর করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, অভয়মিত্র ঘাটের এ জেটিতে একসঙ্গে পাঁচটি লাইটার জাহাজ নোঙ্গর করে পণ্য খালাস করতে পারবে। এ জেটিতে ফুড, স্ক্র্যাপ, জেনারেল কার্গো, সিমেন্ট পণ্য খালাস হবে। এর মধ্যে স্ক্র্যাপের দুটি জাহাজসহ অন্য পণ্যের একটি করে লাইটার জাহাজ ভিড়বে।

এদিকে পণ্য খালাসের পর পরিবহনে নতুন ব্রিজ হয়ে সড়কটি ব্যবহার করবে সব গাড়ি। বন্দরের বহির্নোঙ্গরে বড় মাদার ভ্যাসেল থেকে লাইটারিং হওয়া পণ্য ট্রাক বা গাড়ি উঠবে অভয়মিত্র ঘাটের এ জেটি দিয়ে।

বন্দরের ১৭টি জেটির মধ্যে কর্ণফুলীতে আটটি জেটি লাইটার জাহাজে পণ্য খালাস হতো। সেগুলোর সাথে যুক্ত হবে নতুন এ জেটিও। এতে লাইটার জাহাজে পণ্য খালাস আরও দ্রুত হবে। আগেরগুলোর চেয়ে আধুনিকভাবে তৈরি করা হয়েছে নির্মাণ করা অভয়মিত্র ঘাটের লাইটার জেটি। আর এখানে শুধু লাইটার জাহাজ নয়, কর্তৃপক্ষ ইচ্ছে করলে ১৯০ মিটার থেকে ছোট সাড়ে ৭ মিটার ড্রাফটের জাহাজও ভেড়াতে পারবে।

সরেজমিনে দেখা যায়, অভয়মিত্র ঘাটের খেয়া পারাপারের ঘাটকে পূর্বদিকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই স্থানে আগে অবাধ চলাচল থাকলেও বর্তমানে গেইটে দেওয়া হয়েছে আনসার সদস্য। জেটিতে নোঙ্গর করা রয়েছে নৌ কল্যাণ-২ জাহাজটি। এর পাশে ড্রেজিংয়ের জাহাজও রয়েছে নোঙ্গর করা। যা ওই স্থানেই দিনের বেলায় ড্রেজিং করছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

চট্টগ্রাম বন্দরের ডেপুটি ম্যানেজার (ভুমি) জিল্লুর রহমান চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে জানান, অভয়মিত্র ঘাটের জেটিতে ইতিমধ্যে নৌবাহিনীর ‘নৌ কল্যাণ-২’ জাহাজ দিয়েই ট্রায়াল শুরু করেছে। এ জেটিতে ভাটার সময় ৪ মিটার গভীর ও জোয়ারে সাড়ে সাত থেকে ৮ মিটার গভীরতা থাকবে। লাইটার জাহাজ থেকে পণ্য খালাসে এ জেটি ব্যবহার করা হবে।

জিল্লুর রহমান বলেন, এই জেটি থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের আয় হবে বছরে ২৫ কোটি টাকা। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই শুরু হয়ে যাবে জেটিতে পণ্য খালাসের কাজ।

চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, বন্দরে নতুন জেটি প্রয়োজন ছিল আরও ১০ বছর আগেই। বর্তমান চাহিদার সাথে তাল মিলিয়ে চলতে আরও নতুন জেটি দরকার। কারণ ব্যবসা-বাণিজ্য বছর বছর বাড়ছে, সে হারে জেটির সংখ্যা বাড়েনি। বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য নতুন নতুন যন্ত্রপাতিও দরকার।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!