অবশেষে আলোকিত হচ্ছে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) দায় এড়ানোর পর পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের আলোকায়নের জন্য উদ্যোগ নিয়েছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। পিডিবির এ উদ্যোগে সায় দিয়েছে পতেঙ্গা আউটার রিং রোড নির্মাণে নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্পেক্ট্রা ইঞ্জিনিয়ারিং। পতেঙ্গা সৈকতে আলোকায়ন বাবদ বকেয়া পিডিবির ২ লাখ ১৮ হাজার টাকা বিল কয়েক দিনের মধ্যেই পরিশোধের পর পুনরায় সংযোগ করা হবে সৈকতের সড়ক বাতির বৈদ্যুতিক সংযোগ।
যদিও এর আগে গত জুলাই থেকে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের সড়ক বাতিতে বকেয়া বিলের কারণে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় পিডিবি। এরপর থেকে গত মাস দুয়েক ধরে সন্ধ্যা নামলেই সৈকতে অন্ধাকার নেমে আসে, তৈরি হয় ভুতুড়ে পরিবেশ। এই অবস্থায় পর্যটকদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে উঠে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)। এমনকি এ উদ্বেগের কথা জানিয়ে দ্রুত আলোকায়নের ব্যবস্থার অনুরোধ জানিয়ে সিডিএকে চিঠিও দেয় সিএমপি। কিন্তু আউটার রিং রোড কাম বেড়িবাঁধ নির্মাণে থাকা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) বলছে, পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ হলে তবেই স্থায়ী আলোকায়নের ব্যবস্থা করবে তারা।
পুলিশের ওই চিঠিতে বলা হয়, সৈকতের মূল পয়েন্টে এক সারি সৌরবিদ্যুৎচালিত বাতির মাধ্যমে আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। কেননা পানি থেকে স্থলভাগের দিকে সৈকত এলাকা অনেকখানি প্রশস্ত। ফলে একসারি সৌরবিদ্যুৎ চালিত বাতি দিয়ে সৈকত আলোকিত হয় না।
পতেঙ্গা সৈকতে থাকা প্রায় ৫০ বিদ্যুতের খুঁটিতে কোনো বাতি না জ্বলায় এ নিয়ে চট্টগ্রাম প্রতিদিন ‘অনিরাপদ/সন্ধ্যা হলেই ভুতুড়ে পরিবেশ পতেঙ্গা সৈকতে’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। তবে বিষয়টি পরষ্পর বিরোধী দায় এড়ায় পিডিবি ও সিডিএ। এরপরও গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর পতেঙ্গা সৈকতের আলোকায়নে উদ্যোগ নেয় পিডিবি। তারা সিডিএকে বকেয়া বিদ্যুৎ বিল প্রদানের অনুরোধ করলে সিডিএ বিষয়টি প্রকল্পের কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বকেয়া বিল পরিশোধের অনুরোধ করে। পরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্পেক্ট্রা ইঞ্জিনিয়ারিং দুয়েক এক দিনের মধ্যে বিল পরিশোধ করার আশ্বাস দিয়েছে।
এ বিষয়ে পিডিবির বিক্রয় ও বিতরণ (হালিশহর) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘পতেঙ্গা সৈকতের আলোকায়নের সঙ্গে নিরাপত্তার বিষয়টিও জড়িত। তাই নগরবাসীর কথা চিন্তা করেই আমরা সিডিএকে বিষয়টি ভাবার কথা বলি। পরে তারা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বকেয়া বিল পরিশোধের অনুরোধ করে। আশা করছি দুয়েক দিনের মধ্যে বিল পরিশোধ হলে আলোকয়ান নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা কেটে যাবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘বিল পরিশোধ হলে আমরা সেখানে থাকা ৫০ বৈদ্যুতিক খুঁটির মধ্যে যেসব স্থানে দর্শণার্থীদের অবস্থান বেশি সেসব জায়াগায় বিদ্যুৎ সংযোগ দিব। যাতে নিরাপত্তার বিষয়টি বিঘ্ন না হয়। কেননা সিডিএর এখাতে কোনও বরাদ্দ না থাকার কথা জানিয়ে বিল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাঁধে তুলে দিয়েছে। তাই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানও বলেছে সব খুঁটিতে সংযোগ না দিয়ে মোটামুটি জনসমাগম যেখানে বেশি হয় সেসব স্থানের খুঁটিগুলোতেই বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে। আমাদের বলা মাত্রই আমরা বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে প্রস্তুত।’
জানতে চাইলে সিডিএর চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ বলেন, ‘পিডিবি বারবার আমাদের কাছে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার কথা বলছে। তবে তারা পাওনা বকেয়াও পরিশোধের অনুরোধ করছে। কিন্তু সংযোগের জন্য আমরা আবেদন করিনি। তাই বিলও আমাদের দেওয়ার কথা নয়। এরপরও জনস্বার্থে বিষয়টি আমি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দেখতে বলেছি। হয়তো তারাই বিল পরিশোধ করবে যেহেতু এখন তারা প্রকল্পের কাজ করছে।’
এডি/এসএস