অনিয়মে ভরা ৪০০ কোটি টাকার রাস্তা টিকবে না বেশিদিন (ভিডিও)

মাটি ভরাটে অনিয়ম, ড্রেন নির্মাণে নয়ছয়

চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়কে উন্নয়ন কাজে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। রাস্তার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে পাহাড় কাটা মাটি। রাস্তার পাশে ড্রেন নির্মাণেও ব্যাপক অনিয়মের আশ্রয় নেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, ২০১৯ সালে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পে ৩৯৯ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। এতে দুই ভাগে বিভক্ত করে দুটি উপপ্রকল্প ভাগ করে দুজন ঠিকাদার কাজ শুরু করেন।

গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর ৩৯৯ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়ক সম্প্রসারণ কাজের উদ্বোধন করা হয়। এর অধীনে হাটহাজারী থেকে খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি পর্যন্ত ৩২ দশমিক ৫০ কিলোমিটার সড়কটি চার লেনে উন্নীত করা হচ্ছে।

সড়ক ও জনপথ (সওজ) চট্টগ্রাম বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জুলফিকার আহমেদ জানান, দুই বছর মেয়াদী প্রকল্পের আওতায় এ কাজ সম্পন্ন করা হবে। ৩২ দশমিক ৫০ কিলোমিটার সরু সড়কটি চার লেনে উন্নীত করা হবে। বর্তমান সড়কের দ্বিগুণ আয়তন হবে নতুন সড়কটি। বর্তমানে গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটির প্রস্থ রয়েছে ১৮ ফুট। সড়কটিকে ৩৪ ফুটে উন্নীত করা হচ্ছে। সড়কের পাশাপাশি নির্মাণ করা হবে ৩০৮ মিটারের ৩৮টি আরসিসি কালভার্ট। সড়কবাঁধ প্রশস্ত করতে দেওয়া হবে ৬ লাখ ৪৬ হাজার ৫০৫ দশমিক ৬ ঘনমিটার মাটি। রোড সাইন-সিগন্যাল, গাইড পোস্ট, রোড মার্কিংসহ নেওয়া হবে সড়ক নিরাপত্তায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা। ইস্টার্ন বাংলাদেশ ব্রিজ ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট (ইবিবিআইপি) এর আওতায় চলছে এ কাজ।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, সড়কে মাটি ভরাটে চলছে অনিয়ম। ব্যবহার করা হচ্ছে পাহাড়ের লালমাটি। ড্রেন নির্মাণে করা হচ্ছে নয়ছয়।

সরেজমিনে দেখা যায়, রাস্তার পাশে পর্যাপ্ত মাটি ভরাট না করেই রাস্তার পাশ থেকে খুঁড়ে সেই মাটিই ব্যবহার করা হচ্ছে। তিন ফুট খোঁড়ার কথা থাকলেও সেটুকুও খোঁড়া হচ্ছে না। বালি দিয়ে ভরাট করা স্থানে রোলার চাপাও যথাযথভাবে দেওয়া হচ্ছে না। বালি চেপে মূল সড়কের সঙ্গে মাত্র চার ইঞ্চি ব্যবধান রেখে এতে দেওয়া হচ্ছে ইট-বালুর খোয়া। এ খোয়া দেওয়ার পর আবার রোলার চাপা হচ্ছে।

সিএনজি অটোরিক্সা চালক মো. নাছির উদ্দিন বলেন, যেভাবে রাস্তার কাজ করা হচ্ছে এতে বোঝা যাচ্ছে এ রাস্তা বেশি দিন টিকবে না। একেবারেই নিম্নমানের কাজ করছেন ঠিকাদাররা।

এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান র‌্যাবআরসির প্রজেক্ট ম্যানেজার নুরুজ্জামান বলেন, ‘আমরা পাহাড় কাটার মাটি সড়কে ব্যবহার করছি না।’ লালমাটি কোত্থেকে আসছে— এমন প্রশ্নে তিনি নিরুত্তর থাকেন।

রাস্তার কাজে অনিয়মের বিষয়ে সড়ক ও জনপথ (সওজ) চট্টগ্রাম বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জুলফিকার আহমেদ বলেন, ‘রাস্তায় লালমাটি কোনভাবেই ব্যবহার করা যাবে না। তবে রাস্তার কাজে অনিয়ম করার কোন সুযোগ নেই। অনিয়ম ধরা পড়লে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ ব্যাপারে ফটিকছড়ির সংসদ সদস্য নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘ফটিকছড়ির উন্নয়ন না করে বরাদ্দের টাকা নিয়ে যাবে এমনটি করতে দেবো না। শতভাগ উন্নয়ন করতে হবে। রাস্তার কাজে অনিয়ম করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এএস/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm