অনলাইনে টার্ম ফাইনাল পরীক্ষা বর্জন করেছে চুয়েট শিক্ষার্থীরা

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) পূর্বঘোষিত অনলাইন টার্ম ফাইনাল পরীক্ষা বর্জন করেছে শিক্ষার্থীরা।

রোববার (৩ অক্টোবর) ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ৮৯০ জন শিক্ষার্থীদের ২য় বর্ষের ১ম সেমিস্টারের অনলাইন টার্ম ফাইনাল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু শিক্ষার্থীরা অনলাইন টার্ম ফাইনাল পরীক্ষা বর্জন করেছে।

করোনার সময় থেকে প্রায় ১৭ মাস পর সোমবার (৪ অক্টোবর) ও মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) যথাক্রমে ৩য় বর্ষ (২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ) এবং ১ম বর্ষের (২০১৯-২০) শিক্ষার্থীদের অনলাইন পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। জানা গেছে এই অনলাইন ফাইনাল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীরা জানায়, ল্যাব কার্যক্রম নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করা হয়নি। মেকাপ কিংবা রিভিশন ক্লাস ঠিকমতো নেয়া হয়নি এবং নির্দিষ্ট সময়ে শেষ করা হয়নি। অনেক বিষয়ের সিলেবাসও অসমাপ্ত রয়েছে। এরকম পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা অসম্ভব ছিল। এসব বিষয়ের দ্রুত সমাধান এবং পরীক্ষার জন্য বাস্তবসম্মত একটি নীতিমালার প্রয়োজন।

শিক্ষার্থীরা আরও জানায়, যেহেতু বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের হল খোলা এবং স্বশরীরে পরীক্ষা নেওয়ার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তাই সম্ভব হলে আমরা আবাসিক হলে থেকে স্বশরীরে পরীক্ষা দিতে আগ্রহী।

এক শিক্ষার্থী জানান, আমাদের চলতি টার্ম শেষ হওয়ার পরও ২ মাস কোনোরকম শিক্ষা কার্যক্রম বা পরবর্তী করণীয় কি হবে সেই বিষয়ে আমরা কোনো দিকনির্দেশনাই পাইনি। পরবর্তীতে আমাদেরকে একাডেমিক রুটিন দিয়ে ১ মাসের কার্যক্রম প্রকাশ করা হয়। একটি টার্ম ফাইনাল পরীক্ষায় প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য যতটুকু সময় প্রয়োজন ছিলো, সেই সময় পর্যন্ত আমাদেরকে দেওয়া হয়নি। এরকম অবস্থায় আমরা শিক্ষার্থীদের কাছে পরীক্ষা বর্জন ছাড়া অন্য উপায় ছিল না। আশা করি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিষয়টির সুরাহা করবেন।

শিক্ষার্থীরা জানান, অনেক শিক্ষার্থী প্রত্যন্ত অঞ্চলে থাকায় তাদের পক্ষে নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সংযোগ কখনোই সম্ভব না। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দেখানো পদ্ধতিতে ক্যামেরা স্থাপন করতে হলে কমপক্ষে দুইটি ডিভাইসের প্রয়োজন যা অধিকাংশ শিক্ষার্থীর পক্ষে সম্ভব নয়। এসব সমস্যার প্রেক্ষিতে ১ম, ২য়, ৩য় শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা গত ২৭ সেপ্টেম্বর অনলাইন পরীক্ষার নীতিমালা পরিবর্তনের জন্য সকল বিভাগীয় প্রধানের নিকট আবেদন করেন। সে আবেদনের কোন যথোপযুক্ত উত্তর না পেয়ে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা বর্জনের সিদ্ধান্ত নেন।

তবে চলমান তিন ব্যাচের এমন পরীক্ষা বর্জন করার বিষয়টি শিক্ষার্থীদের পক্ষে ভালো প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন না বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম। পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করার বিষয় ও এর পরবর্তী কি সিদ্ধান্ত আসতে পারে এমন প্রশ্নের উপাচার্য বলেন, শিক্ষার্থীরা যে দাবি নিয়ে পরীক্ষা বর্জন করেছে তা আমরা ভেবে দেখেছি। তবে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা তাদের জন্য ভালো ফল আনতো। করোনায় পুরো সময়ে যে সময়ের গ্যাপ হয়েছে তা কমিয়ে আনতেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল।

তিনি আরও বলেন, পরীক্ষায় বসাটা তাদের জন্য ভালো ফল আনতো । যেহেতু তারা অংশগ্রহণ করেনি, এর পরের সিদ্ধান্ত অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল নিবে। ডিন কমিটি, বিভাগীয় প্রধানদের নিয়ে আলোচনা শেষে বিস্তারিত জানানো যাবে।

এমএহক

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!