অদ্ভূত নবজাতককে দেখতেও রাজি নন বাবা-মা, বিদেশি ডাক্তাররা ছুটে এলেন দায়িত্ব নিতে

অস্বাভাবিক দৈহিক গঠন নিয়ে জন্ম নেওয়া এক নবজাতককে হাসপাতালে রেখেই চলে গেলেন মা-বাবা। এমনকি তারা ওই বাচ্চাকে দেখতেও চাননি একবারও। মা চিকিৎসা নিয়েই একা বাড়ি ফিরে গেছেন। শেষ পর্যন্ত জন্মেই এতিম হয়ে যাওয়া সেই শিশুর দায়িত্ব নিলেন চন্দ্রঘোনা মিশন হাসপাতালে কর্মরত বিদেশি চিকিৎসক টিমের সদস্যরা। এরই মধ্যে চট্টগ্রাম থেকেও এক নারী শিশুটির দায়িত্ব নিতে ছুটে যান ওই হাসপাতালে।

রাঙ্গামাটির কাপ্তাই উপজেলার চন্দ্রঘোনা মিশন হাসপাতালে ঘটেছে এমন ঘটনা।

জানা গেছে, গত ২৮ মার্চ রাত সাড়ে ৯টার দিকে একটি ছেলেসন্তানের জন্ম দেন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর এক নারী। তার বাড়ি বিলাইছড়ি উপজেলার ৩নং ফারুয়া ইউনিয়নের ধোপাছড়ি গ্রামে। জন্মের পর দেখা যায়, ওই নবজাতকের মাথা অস্বাভাবিক মোটা, ঠোঁট আর তালু কাটা। চিকিৎসকরা একে হাইড্রোক্যাফালাস, ক্লেপ্ট লিপ ও ক্লেপ্ট পেলেট বলে জানান।

নবজাতকের এমন অস্বাভাবিক দৈহিক গঠনের কথা শুনে তার বাবা-মা একবারের জন্যও তাকে দেখতে আর চাননি। ওই নবজাতককে ঘরে নিতে অসম্মতি জানিয়ে ওই দম্পতি জানান, বাচ্চাটি দেখলে তাদের অমঙ্গল হবে।

এর মধ্যেই সিজারিয়ান পরবর্তী চিকিৎসা নিয়ে গত ১ এপ্রিল নবজাতকের মা হাসপাতাল ছেড়ে যান।

শেষ পর্যন্ত জন্মেই এতিম হয়ে যাওয়া সেই শিশুর দায়িত্ব নিতে এগিয়ে আসেন চন্দ্রঘোনা মিশন হাসপাতালে কর্মরত বিদেশি চিকিৎসক টিমের সদস্যরা। জন্মের দিন সারারাত শিশুটিকে কোলে নিয়ে বসে ছিলেন ওই টিমের এক চিকিৎসকের স্ত্রী সারা নুল।

চন্দ্রঘোনা মিশন হাসপাতালে কর্মরত যুক্তরাষ্ট্রের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. এলিজাবেথ জানিয়েছেন, এরই মধ্যে ওই নবজাতকের অপারেশনের জন্য প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। তবে জটিল ওই অপারেশন অন্তত তিন মাসের আগে সম্ভব নয়।

তবে বিদেশি চিকিৎসক টিমের সদস্যরা আশা করছেন, অপারেশনের পর শিশুটি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরবে।

এদিকে বুধবার (৬ এপ্রিল) ওই নবজাতকের দায়িত্ব নিতে চন্দ্রঘোনা মিশন হাসপাতালে ছুটে যান চট্টগ্রাম নগরীর ব্যাটারি গলির মিনু বারিকদার। শিশুটির দায়িত্ব নিতে আগ্রহ প্রকাশ করে তিনি জানান, ওই নবজাতকের নিজের সন্তানের মতো লালন-পালন করবেন তিনি।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!