উপবৃত্তির সঙ্গে ২৫ হাজার টাকা বোনাসের কথা বলে চট্টগ্রামে এক কলেজ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে মোবাইল ব্যাংকিংসেবা বিকাশের মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে অভিনব কৌশলে। শিক্ষাবোর্ডের কর্মকর্তা পরিচয়ে এই অর্থ হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের মহাজনহাট এফ রহমান কলেজের এইচএসসি প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থীর পরিবারের মুঠোফোনে গত ২৯ সেপ্টেম্বর বিকেল ৪টায় ০১৩১৯৯২৭৯৬৫ মোবাইল নম্বর থেকে একটি ফোন আসে। ফোন দিয়ে ওই প্রান্ত থেকে ছাত্রীর নাম ও পিতার নাম বলার পর জানানো হয় উপবৃত্তির সাথে ২৫ হাজার টাকা বোনাস পাবেন ওই কলেজ শিক্ষার্থী। তবে তার আগে একটি অংকের সমাধান করে দিতে হবে বলে জানায় ওই প্রতারক। এপাশ থেকে ছাত্রী সেই ‘অংক’ সমাধান করে দেওয়ার সাথে সাথে তাদের মোবাইলের বিকাশ একাউন্টে থাকা থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা ক্যাশআউট হয়ে যায় এবং এরপর থেকে বিকাশ একাউন্টেও আর ঢোকা যায়নি।এরপর ওই নাম্বারে একাধিকবার ফোন দিলে মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী শাহপরান আক্তার বলেন, গত ২৯ সেপ্টেম্বর আমার কলেজে উপবৃত্তির ফরম জমা দেওয়ার পর একইদিন বিকেল ৪টায় শিক্ষাবোর্ডের কর্মকর্তার পরিচয়ে আমার মুঠোফোন নাম্বারে ফোন দেয়। ফোন রিসিভ করার সাথে সাথে ওই পাশ থেকে আমার সঠিক নাম ঠিকানাসহ যাবতীয় তথ্যাদি উল্লেখ করে সব তথ্য সঠিক আছে কিনা জিজ্ঞেস করা হয়। তারপর ওই প্রান্ত থেকে শিক্ষাবোর্ডের কর্মকর্তা পরিচয় দেওয়া প্রতারক বলে, শিক্ষা বোর্ড থেকে তোমার জন্য উপবৃত্তির সাথে ২৫ হাজার টাকা বোনাস রয়েছে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, এরপর ওই প্রতারক জানায়, আমাকে একটা সহজ অংক দিয়ে ওটার সমাধান করে উত্তরটা ২ মিনিটের মধ্যে দিতে হবে। তারপর একটা বিকাশ তথ্য ভেরিফাইয়ের জন্য কোড যাবে ওটা মিলিয়ে উত্তর যোগ করে দিতে বলা হয়। তার ঠিক ১০ সেকেন্ডের মধ্যে আমাদের মোবাইলে থাকা ২ হাজার ৫০০ টাকা উধাও হয়ে যায়। এরপর থেকে ওই মোবাইলটি বন্ধ রয়েছে।
যোগাযোগ করা হলে মহাজনহাট কলেজের অধ্যক্ষ মো. সোহরাব হোসেন বলেন, আমাদের কলেজের এক ছাত্রী প্রতারণার শিকার হওয়ার কথা শুনেছি। প্রতারকচক্র বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। শিক্ষার্থীরা কলেজে উপবৃত্তির ফরম জমা দেওয়ার পর তা সাথে সাথে অনলাইনের মাধ্যমে জমা দেওয়া হয়েছে। কেউ হয়তো অনলাইন থেকে হ্যাক করে এমন প্রতারণা করতে পারে। আমি এই বিষয়ে সকল শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সচেতন থাকার অনুরোধ করছি।
তবে মিরসরাই উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির খাঁন বলেন, বোর্ড কর্মকর্তার পরিচয়ে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়টি আমি অবগত নই। খোঁজ খবর নিয়ে দেখছি। তবে এসব ব্যাপারে সবাইকে আরো বেশি সচেতন হতে হবে।
সিপি